আজ বৃহস্পতিবার, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে হেরে গেল রফিক

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

কায়েতপাড়ায় দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করে হেরে গেছেন ভূমিদস্যু আন্ডা রফিকের ভাই মিজান।

বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তারা পরাজিত হয়। কায়েতপাড়ায় নৌকার এ বিজয়ের মহানায়ক ছিলেন রূপগঞ্জে আওয়ামী রাজনীতির ভবিষ্যত কান্ডারী গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা। তিনি নৌকাকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে কায়েতপাড়ায় মাঠ চষে বেড়ান । প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চান। দিনরাত তাকে মাঠে দেখা গেছে । অনেক প্রতিকুলতার মধ্যেও তিনি হালছাড়েননি । ভূমিদস্যুদের গুজবে তিনি কখনো হতাশ হননি। মনোবল শক্ত রেখে তিনি দলীয় নেতা কর্মীদের নিয়ে মাঠে ছিলেন। কায়েতপাড়ায় এবার কিছু নেতা নৌকার বিরোধীতা করেছেন। সেই নৌকা বিরোধীদের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেছেন বিসিবির পরিচালক ও মন্ত্রীপুত্র গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা। এক কথায় বলা চলে গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা কায়েতপাড়া জয় করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ও দলীয় নেতারা জানান, এবার কায়েতপাড়া ইউপি নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে গাজী পরিবার মাঠে ছিলো। বিশেষ করে তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা, তিনি মাঠে না থাকলে হয়ত নৌকা হেরে যেতো। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে মাঠে খেলেছেন আর নৌকাকে জয়ী করেছেন। তার এ খেলায় হেরে গিয়েছেন ভূমিদস্যুরা। এ জয়ের ফলে কায়েতপাড়া আওয়ামী লীগের ঘাটি তা প্রমাণ হয়েছে। প্রমাণ হয়েছে কায়েতপাড়াবাসী গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পার সাথে আছে। তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মান রক্ষা করেছেন।
উল্লেখ্য এর আগে বহুবার চেয়ারম্যান নির্বাচন করে হেরে যায় ডিম বিক্রেতা রফিক। ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের প্রচেষ্টায় বিনা ভোটে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর থেকে তিনি অপকর্মে জড়ান। তার অপকর্মের কারণে দল তাকে এবার মনোনয়ন দেয়নি। মনোনয়ন না পেয়ে তিনি ভাইকে দিয়ে নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করান। যার কারণে কায়েতপাড়া আওয়ামী লীগের ১৫ জনকে দল থেকে চূড়ান্তভাবে অব্যাহতি দিয়ে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত ৬ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারকৃতরা হলেন বিদ্রোহী প্রার্থী মিজানুর রহমান, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান রফিক, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ইয়ার হোসেন, রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য শামসুল আলম, করিম পাঠান, ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলতাফ হোসেন, ৬ নং আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলাউদ্দিন , ১ নং ওয়ার্ড (নাওড়া ) আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম, ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সদস্য মমিনুল হক, আনার উদ্দিন, হরিনার আব্দুল জলিল, কায়েতপাড়া ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আমিন বেপারী, ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ মিজানুর রহমান মিজান, কায়েতপাড়া ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সামসুল হক।

গত ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল তাদেরকে দল থেকে বহিস্কারের চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। তাদেরকে দল থেকে বহিস্কার সুপারিশের চিঠি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। যে কোনো সময় উক্ত ব্যক্তিরা বহিস্কারের চিঠি পাবে। এছাড়া বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য খন্দকার আবুল বাশার টুকুকে সতর্ক বার্তা দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। তিনি দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করলে দলীয় আইনে তার বিরুদ্ধে শাস্তিসহ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইঞ্জি. শেখ সাইফুল ইসলাম জানান, বহিস্কৃতদের নামের তালিকা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এর চিঠির আলোকে তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।